ইউটিউবের ভিডিও ফেসবুকে দেওয়া যাবে কি না ? এবং ইউটিউবের ভিডিও ফেসবুকে মনিটাইজেশন পাবো কিনা ( প্রথম পর্ব )

ফেসবুক বাংলাদেশে ভিডিও মনিটাইজেশন দিয়েছে, একথা মোটামুটি সবাই জানে। বাংলাদেশের অনলাইন ইনকামের বড় অংশই ছিলো ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করা থেকে। তাই ইউটিউবার এবং ইউটিউব রিলেটেড ভিডিও প্রোডাকশনও তৈরী হয়েছে অনেক পরিমাণে। ফেসবুক মনিটাইজেশন দেয়ার পর সবার মাথায় একটি প্রশ্নই প্রথমে এসেছে। আর তা হলো, ইউটিউবের জন্য বানানো নিজের তৈরী করা ভিডিওগুলো ফেসবুকে দেয়া যাবে কিনা। অনেকেই তাদের নিজের মতো করে উত্তর তৈরী করে নিয়েছেন। কেউ বলেছেন হ্যা দেয়া যাবে, আবার কেউ বলছেন না দেয়া যাবেনা, কপিরাইট হবে (ক্লেইম না ষ্ট্রাইক নাকি অন্য কিছু, তা কেউ বলেননি)। এই বিষয়টি ক্লিয়ার করার জন্যই আজকের পোষ্ট। 

প্রথমেই একটি বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো যে, আমরা প্রায়ই বলি ইউটিউব থেকে ষ্ট্রাইক বা ক্লেইম এসেছে। এখানেই মুল ভুলটি। আসলে ইউটিউব কপিরাইট সংরক্ষণ করার কোন কর্তৃপক্ষ নয়। ষ্ট্রাইক বা ক্লেইম ইউটিউব নয় বরং কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হতে ইউটিউবের মাধ্যমে এসেছে। কপিরাইট একটি আইনী প্রক্রিয়া, যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আইনসম্মতভাবে সংরক্ষিত হয়। যারা এই কাজটি করে থাকে তারাই হচ্ছে এমসিএন বা থার্ড পার্টি ডিষ্ট্রিবিউশন প্রোভাইডার। যেমন https://www.identifyy.com/ কপিরাইট প্রক্রিয়া শুধুমাত্র ইউটিউব এবং ফেসবুক পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয়। বরং যে কোন প্রকার মাধ্যমের জন্যই কপিরাইট প্রযোজ্য হতে পারে। যেমন ওয়েব, ইনষ্টাগ্রাম, টেলিভিশন ইত্যাদি। তাই ইউটিউব বা ফেসবুক একা বা যৌথভাবে কপিরাইট নিয়ন্ত্রণ করে এমনটা নয়। যেহেতু কনটেন্ট তাদের সার্ভিসে হোস্ট করা এজন্য তারা শুধুমাত্র মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। বাদবাকী আইনগত প্রক্রিয়া বাদী-বিবাদীর মধ্যেই সম্পন্ন হতে হয়। ইউটিউবে যে কপিরাইট ষ্ট্রাইক হয় তাও একটি আইনগত প্রক্রিয়ারই অংশ। কপিরাইট নিয়ে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখা যাবে, এই অংশটা এতোটাই বড়ো। তাই আর বাড়াচ্ছিনা।

এবারে মুল কথায় আসি। তাহলে একটা আইডিয়া পাওয়া গেল যে, নিজের বানানো ইউটিউবের ভিডিও ফেসবুকে দিতে গেলে কপিরাইট সংক্রান্ত কোন বিষয় একেবারেই নেই। কারণ ইউটিউব বা ফেসবুক কপিরাইট কর্তৃপক্ষই নয়, এবং তাদের কনটেন্ট আইডিও ভিন্ন। হ্যা যদি কেউ তার কনটেন্টকে থার্ড পার্টি ডিষ্ট্রিবিউশন সিস্টেম দ্বারা বিভিন্ন স্পেশিফিক সার্ভিসের জন্য প্রোটেকটেড রাখে তাহলে সেই কনটেন্ট আপনি ওই সার্ভিসগুলোতে আপলোড করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আপনি কপিরাইট ক্লেইম, ব্লক বা ষ্ট্রাইক পেতেই পারেন। তাই আপনি আপনার সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রোডাকশন হলে ইউটিউব, ফেসবুক বা ইনষ্টাগ্রামে পোষ্ট করতেই পারেন। তাতে করে আর যাই হোক কপিরাইটের কোন ইস্যু নেই। আগেই বলেছি যে, প্রত্যেকটি সার্ভিসই তাদের কনটেন্টকে আলাদা ভাবে চেনার জন্য কনটেন্ট আইডি অটো জেনারেট করে থাকে, তাই অন্য কারো কনটেন্ট দিলে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আপনার কোন সমস্যা হবেনা, কিন্তু আপনি যে অন্য কারো ভিডিও ব্যবহার করছেন তা সার্ভিসগুলো ঠিকমতোই জানে। উদাহরণ হচ্ছে ইউটিউবের ’কপিরাইট ম্যাচ টুলস’ এবং ফেসবুকের ’রাইটস ম্যানেজার’। অন্যের ভিডিও আপনি আপলোড করলে তা সার্ভিসগুলো অবগত থাকবে বিধায় মনিটাইজেশন পাবেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত নই। আমার ধারণা এধরণের ম্যাচিংয়ের বা কমন আপলোডের পরিমাণ বেশী থাকলে মনিটাইজেশন নাও দিতে পারে। কারণ সার্ভিসগুলো অবশ্যই অরিজিনাল ক্রিয়েটরদের স্বার্থকেই আগে দেখবে। 

তাহলে কি আমি আমার সম্পূর্ণ নিজের বানানো ইউটিউবের ভিডিও নিশ্চিন্তে ফেসবুকে আপলোড করতে পারি? আমার উত্তর হচ্ছে: না। কেন ’না’ বললাম সে বিষয়ে আসছি পরের পোষ্ট নিয়ে। আজ রাত ঠিক নয়টায়।

পরের পর্ব ইউটিউবের (youtube) ভিডিও ফেসবুকে (facebook) দেওয়া যাবে কি না ? ( দ্বিতয় পর্ব )

আপডেট: অন্যের কনটেন্ট আপলোড করার ক্ষেত্রে মনিটাইজেশন হোক বা না হোক ক্লেইম করা যেতেই পারে। ধন্যবাদ 


হ্যাপি ইউটিউবিং অথবা ফেসবুকিং
কামরুল ইসলাম রুবেল 

No comments

ধন্যবাদ মতামতের জন্য ।
আমাদের সাথেই থাকুন

Theme images by urbancow. Powered by Blogger.